টাঙ্গন ব্যারেজ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়ার রাজাগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চাপাতি গ্রামে অবস্থিত, যার বাস্তবায়ন ১৯৮৪-১৯৮৫ সালে শুরু হয় এবং ১৯৯২-১৯৯৩ সালে এর কাজ শেষ হয়। প্রকল্পটির উদ্দেশ্য ছিল, ওই এলাকার আমন মৌসুমে সেচ সুবিধা প্রদান। প্রকল্প আওতাভুক্ত জমি ৬০৭০ হেক্টর ও সেচ যোগ্য জমি ৪৪৫০ হেক্টর। ব্যারেজের পানি নির্গমন ক্ষমতা প্রতি সেকেন্ডে ২৮৭ ঘনমিটার।
টাঙ্গন নদী বাংলাদেশ-ভারতের মধ্য দিয়ে সমানভাবে প্রবাহিত। এটি একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। নদীটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। টাঙ্গন পুনর্ভবা নদীর একটি উপনদী। দু’দেশের পানি ভাগাভাগি নিয়ন্ত্রণে নির্মাণ করা হয়েছে টাঙ্গন ব্যারেজ। বর্ষা মৌসুমে এই ব্যারেজ এলাকা ভ্রমণ পিপাসুদের দৃষ্টি কাড়ছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক ভিন্ন রূপ ছড়িয়ে আছে ব্যারেজ এলাকায়। অবশ্য শীতকালেও এক ভিন্ন রূপ পায় টাঙ্গন ব্যারেজ পর্যকটদের কাছে।
প্রতিবছর শীতকালে পানি কমে গেলেও বর্ষাকালে টাঙ্গন পানিতে থৈ থৈ। ভরা মৌসুমে মৎস্য বিভাগের আওতায় টাঙ্গন নদীর ওপর নির্মিত টাঙ্গন ব্যারেজের প্লাবন ভূমিতে সরকারিভাবে মাছ অবমুক্ত করা হয়। তিন মাস পর ব্যারেজের গেট খুলে দিলে এখানে শুরু হয় পাঁচ দিনব্যাপী মাছধরার উৎসব। পঞ্চগড়, দিনাজপুর নীলফামারীসহ দেশের বিভিন্ন জেলার মাছ শিকারিরা এখানে এসে তাবু গেঁড়ে, কেউ কলাগাছের ভেলায় আবার কেউ নৌকা করে বিস্তির্ণ এলাকায় মাছ শিকার করেন। এতে প্রতিদিন এখানে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়। পৃথিবীর তৃতীয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘায় সকালের কাঁচা রোদে চকচক করা অপরূপ সৌন্দর্য দেখা যায় টাঙ্গন ব্যারেজের ওপর থেকে।
ঠাকুরগাঁও শহর থেকে উত্তরে সেনুয়া নদীর ওপর হয়ে উত্তরে ১৯ কিলোমিটার গেলেই টাঙ্গন ব্যারেজ। বেবিটেক্সি, অটোবাইক ও মাইক্রোবাস নিয়ে সেখানে যাওয়া যায়। নদীর পানি আটকিয়ে উজানে সৃষ্টি হয় নয়নাভিরাম দৃশ্যের। বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজন অবসরের অবসাদ কাটাতে ছুটে যান টাঙ্গন ব্যারেজ এলাকায়। ভ্যানে চড়ে কিংবা পায়ে হেঁটে উপভোগ করা যায় টাঙ্গন ব্যারেজ এলাকার অপরূপ সৌন্দর্য্য। এখানে সুন্দর ও নিরিবিলি একটি ডাকবাংলো রয়েছে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস