১৮০০ সালে বৃটিশ শাসনামলে টাঙ্গন, শুক, কুলিক, পাথরাজ ও ঢেপা বিধৌত এই জনপদের একটি ঠাকুর পরিবারের উদ্যোগে বর্তমান পৌরসভা এলাকার কাছাকাছি কোনো একটি স্থানে থানা স্থাপিত হয়। তাদের নাম অনুসারে থানাটির নাম হয় ঠাকুরগাঁও থানা। মতান্তরে ঠাকুর-অর্থাৎ ব্রাহ্মণদের সংখ্যাধিক্যের কারণে স্থানটির নাম ঠাকুরগাঁও হয়েছে। ১৮৬০ সালে এটি মহকুমা হিসেবে ঘোষিত হয়। এর অধীনে ছয়টি থানা ছিলো যথা-সদর, বালিয়াডাঙ্গী, পীরগঞ্জ, রাণীশংকৈল, হরিপুর ও আটোয়ারী। ১৯৪৭ সালে ভারতের জলপাইগুড়ি জেলার ৩টি থানা ও কোচবিহারের ১টি থানা (আটোয়ারী ছাড়া পঞ্চগড় জেলার বাকি ৪টি থানা) নিয়ে ১০টি থানার মহকুমা হিসেবে ঠাকুরগাঁও নতুনভাবে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু ১৯৮১ সালে আটোয়ারী, পঞ্চগড়, বোদা, দেবীগঞ্জ ও তেতুলিয়া নিয়ে পঞ্চগড় আলাদা মহকুমা হলে ঠাকুরগাঁও এর ভৌগলিক সীমানা ৫টি থানা এলাকায় সংকুচিত হয়ে যায়। থানাগুলি হচ্ছে-ঠাকুরগাঁও সদর, বালিয়াডাঙ্গী, পীরগঞ্জ, রাণীশংকৈল ও হরিপুর। ১৯৮৪ সালের ১ লা ফেব্রুয়ারি এই ৫টি থানা নিয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা যাত্রা শুরু করে।
ছোট জেলা হলেও ঠাকুরগাঁও একটি প্রাচীন ঐতিহ্যসমৃদ্ধ জনপদ। এখানে যেমন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানুষ হাজার বছর ধরে তাদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে ধরে রেখেছে, তেমনিভাবে বৌদ্ধ, হিন্দু, মুসলমান শাসনামলের পরিবর্তনের ছোঁয়ায় পালাবদলের প্রক্রিয়া চলছে এখানে। জেলার অতি প্রাচীন পুকুরগুলি এবং গড়গুলির অস্তিত্ব সুপ্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন তুলে ধরে। এই জেলার মানুষ বৃহত্তর দিনাজপুর জেলার অন্যান্য জনপদের সভ্যতা ও সংস্কৃতির সাথে যোগসূত্র স্থাপন করে সকল সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছে। ১৯৭১ এর স্বাধীনতা লাভের পর বরেন্দ্রভূমির অন্যান্য জেলার মতই ঠাকুরগাঁও জেলার মানুষ ক্রমান্বয়ে উন্নততর যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং উন্নয়নের অন্যান্য সুফল লাভে সক্ষম হচ্ছে এবং ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস