হরিপুর উপজেলা থেকে প্রায় আট কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে ভারতীয় সীমান্তের সন্নিকটে ভাতুরিয়া নামক গ্রামের কাছেই গড়ভবানীপুর। অনেকে মনে করেন এটি রাজা গণেশের ভাতুরিয়া পরগনার অন্তর্গত ছিল। রাজা গণেশ নিজে (১৪১৪-১৮ খ্রিঃ) গড়টি স্থাপন করেছিলেন। গৌড়ের সিং'হাসন লাভের পূর্বে তিনি এই অঞ্চলের প্রতাপশালী জমিদার ছিলেন। রাজা গণেশের মৃত্যুর পর তার হিন্দু বংশধররা ভাতুরিয়া গ্রামে বসবাস করতেন। আবার এমন ধারণাও প্রচলিত আছে যে, রাজা গণেশের রাজকর্মচারী দাহির কর্তৃক নির্মিত গড়টি গড়ভবানী নামে পরিচিত। রাম,মাধব,গোপাল ও যাদব নামে চার পুত্র ছিল। এই চারপুত্রের নামে চারটি খামার প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এগুলো মৌজায় রূপান্তরিত হয়।
গড়টির দৈর্ঘ্য উত্তর দক্ষিণে প্রায় দেড় কিলোমিটার এবং প্রস্থ প্রায় এক কিলোমিটার। দুর্গের চারদিকে মাটির প্রাচীর দেখা যায়, যার উচ্চতা এখন আট ফুটের বেশি হবে না। গড়ের মাঝখান দিয়ে উত্তর দক্ষিণ বরাবর কাঁচা রাস্তা চলে গেছে। রাস্তার পশ্চিমে একটি বেশ বড় ও গভীর দিঘি আছে। দিঘিটি 'তন্বী দিঘি' নামে পরিচিত। গড়ের পূর্ব ও দক্ষিণ দিকে কুলিক নদী প্রবাহিত। বর্তমানে নদীটির অবস্থা জীর্ণদশা। পশ্চিম এবং উত্তরে জলাধার ছিল। নদী এবং জলাধার দ্বারা দুর্গটি ছিল অত্যন্ত সুরক্ষিত। গড়টিতে প্রাচীন ইমারতের কোনো ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়নি। তবে ইট ও মৃৎপাত্রের ভগ্ন অংশ এখনো কোনো কোনো জায়গায় পাওয়া যায়। পুকুরের নিকটে আছে একটি মাজারের ধ্বংসাবশেষ। এর কাছেই রয়েছে প্রাচীন গোরস্থান। গড় ভবানীপুরের সঠিক ইতিহাস পাওয়া কঠিন। মাজারের ধ্বংসাবশেষ দেখে মনে হয় এটি মুসলিম শাসনামলে পুনরায় ব্যবহৃত হয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিক আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া বলেছেন-' এ দুর্গটি এত অর্বাচীন নয়। খুব সম্ভব হিন্দু-বৌদ্ধযুগে এটি নির্মিত হয়েছিল।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস